রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন, ঝুঁকিতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা
সেবা পোস্ট ই-সেন্টারের আদর্শ
ছবি: প্রতিনিধি

রোহিঙ্গাদের
কাছে মোবাইল সিম বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়ে ক্যাম্পগুলোতে ১০টি টেলিটক
বুথ স্থাপন করেছিল সরকার। অথচ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বলপ্রয়োগপূর্বক
বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে এখন মোবাইল ফোন। বাংলাদেশের
বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির সিম অবাধে ব্যবহার করছেন তারা। এসব সিম রাষ্ট্রীয়
নিরাপত্তা ঝুঁকি ও রোহিঙ্গাদের দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। তাই
মোবাইল ফোনগুলো অবিলম্বে জব্দের দাবি উঠছে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের মোবাইল সিমকার্ড
সংগ্রহে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি দেওয়া বাধ্যতামূলক।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন ছাড়া বিক্রিও নিষিদ্ধ। কিন্তু রোহিঙ্গারা এসব
ছাড়াই সহজেই সিম সংগ্রহ করছেন।
সরেজমিনে কুতুপালং, বালুখালির, জামতলা,
হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বৃদ্ধ থেকে কিশোর-কিশোরী পর্যন্ত সব বয়সী
নারী-পুরুষের হাতে মোবাইল ফোন দেখা গেছে। আরও অনেকেই সেট-সিম কিনতে
টেকনাফ-উখিয়ার মোবাইলের দোকানগুলোতে ভীড় করছেন। গড়ে উঠেছে মোবাইল ফোন
চার্জের ব্যবসাও।
রোহিঙ্গা নারী নুর নমিনা বেগম জানান, রাখাইন
রাজ্যের অনেক দূর পর্যন্ত অনায়াসেই বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের
নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। ফলে সেখানে থাকতেও অনেক রোহিঙ্গা গোপনে বাংলালিংক,
রবি ও গ্রামীণফোনের সিম ব্যবহার করতেন। তবে বিদেশি সিমকার্ড ব্যবহার
মিয়ানমারেও গুরুতর অপরাধ।
বালুখালি ক্যাম্পের মো. সলিম জানান, তার ভাই
দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফের শামলাপুরের ক্যাম্পে আছেন। তার মাধ্যমেই সিম
পেয়েছেন। তাদের পরিবারের কয়েকজন এখনো মংডুতে আছেন। তাদের অবস্থা জানতে
মোবাইল তাই খুব দরকার।
উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সরওয়ার আলম শাহীন
বলেন, মোবাইল কোম্পানির ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের অনিয়মের কারণেই সিম চলে
যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের হাতে। অল্পশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত লোকজন সিম কিনতে গেলে
নানা অজুহাতে ৪/৫ বার বা সুযোগ পেলে আরও বেশি ফরমে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নেন
বিক্রেতারা। একটি ফরম পূরণ করে জমা দেওয়া হলেও অন্যগুলো পরবর্তীতে ব্যবহার
করেন। কেউ সিম কিনতে গেলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলেও ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়
দিয়ে দেন। এভাবেই প্রায় ৬ লাখ সিমকার্ড রোহিঙ্গাদের হাতে চলে গেছে।
সরওয়ার আলম শাহীন বলেন, ডিলার ও অপারেটরদের এ
অনিয়মে নিরাপরাধ লোকজন ভবিষ্যতে বড় ধরনের বিপদে পড়বেন। রোহিঙ্গারা অপরাধ
করলে সিমের তথ্য অনুসারে অনেক নিরীহ ব্যক্তিকে হয়রানির শিকার হতে হবে। এ
ব্যাপারে তাই এখনই সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজাপালং ইউপির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির
চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেই সিম নিচ্ছে। মোবাইলে যোগাযোগ করে
যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে পারে তারা। তাদের হাতে এত মোবাইল ফোন
থাকা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যও ক্ষতিকর। এসব সিম দ্রুত জব্দ করা উচিত।
No comments
Post a Comment